রবিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:০৪ অপরাহ্ন
ভয়েস নিউজ ডেস্ক:
ঢাকার প্রবেশমুখে অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে পুলিশের হামলায় আহত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে আজ রবিবার দুপুরে দেখতে গিয়েছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এ ছাড়া সারাদিনই বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে দেখতে যান।
পরে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘পুলিশের হামলায় গুরুতর আহত হওয়ার পর মাথা রক্তে ভিজে গিয়েছিল। পুলিশ একটি বদ্ধ রুমে গিয়ে আমার রক্ত পরিষ্কার করে যাতে মিডিয়ায় রক্তাক্ত ছবি আসতে না পারে। এরপর আমি চলে যেতে চাইলে আমাকে না ছেড়ে তাদের গাড়িতে করে হাসপাতালে নেওয়ার কথা বলে। রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে নেওয়ার পর হাসপাতালের রেজিস্ট্রারে নাম লিপিবদ্ধ না করে চিকিৎসা দেওয়া হয়। আর এ কারণে পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারছি না।’
ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমি ডায়াবেটিস রোগী, মিষ্টি খাওয়া নিষেধ। দুপুরে ভাত খাই না। রুটি খাই। ডিবি প্রধান হারুণকে বলার পরও জোর করে খাইয়ে দিয়েছে। তা ছাড়া তার সরবরাহ করা খাবার নিয়ে আমার সন্দেহ ছিল। কিন্তু খাওয়ার সময় ছবি তুলে নিম্ন রুচির পরিচয় দিয়েছে।’
গয়েশ্বর বলেন, ‘একমাত্র মৃত্যু চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলন থেকে আমাকে থামাতে পারবে। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে চলমান গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন সফল না হওয়া পর্যন্ত তিনি যেন আমাকে চিতায় না তোলেন। ঈশ্বরের কাছে আমার প্রার্থনা, চিতায় ওঠার আগে যেন এই সরকারের পতন দেখে যেতে পারি।’
শনিবারের হামলার বর্ণনা দিতে গিয়ে এ সিনিয়র রাজনীতিক বলেন, ‘পুলিশের ছোড়া ইটের আঘাতে মাথা থেকে রক্ত ঝড়ছিল। সেদিকে খেয়াল না দিয়ে নেতা-কর্মীদের রক্ষায় বুক পেতে দিয়েছিলাম। একটা কর্মীর ক্ষতি হওয়ার আগে যেন আমার ক্ষতি হয়। এই অবস্থায় আমাকে পিটিয়ে রাস্তায় ফেলে সাপ পেটানোর মতো পেটানো হয়। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের গণতান্ত্রিক বিশ্ব প্রত্যক্ষ করেছে।’
তিনি বলেন, ‘ডিবি কার্যালয়ে আমাকে নিয়ে খাওয়ানোর ছবি তুলে তার ছবিসহ ভিডিও বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয় পুলিশ। এ ঘটনাকে অত্যন্ত ন্যক্কারজনক ও ঘৃণ্য কর্মকাণ্ড। যারা এ কাজটি করেছে, এটি অত্যন্ত নিম্ন রুচির পরিচায়ক। এক ধরনের তামাশাপূর্ণ নাটক। এতে কি সরকার প্রমাণ করতে চায় যে, আমরা হা-ভাতে? ভিক্ষা করে খাই? গ্রামের ভাষায় বলা হয় ‘খাইয়ে খোঁটা দেওয়া’।
ক্ষোভ প্রকাশ করে গয়েশ্বর বলেন, ডিবি অফিসে আমার সঙ্গে যা করা হলো তা ওই রকমই। আমার বাড়িতে তো বিভিন্ন সময় অনেক লোক খায়। এটা আমার জন্য অত্যন্ত সম্মানের। কিন্তু এই খাবারের ছবি উঠিয়ে কি আমি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেব? এটা কি আমার জন্য ভালো হবে।
চলমান জনসম্পৃক্ত আন্দোলন সফল হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন গয়েশ্বর রায়। তিনি দাবি করেন, গত শনিবার বিকেল ৩টার দিকে ডিবি কার্যালয় থেকে নয়াপল্টনে নিজের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে তাকে পৌঁছে দেওয়া হয়। তখনও তার কাছ থেকে কিছু লেখা একটি কাগজে স্বাক্ষর নেয় ডিবি।
ভয়েস/আআ